সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪০ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নিমসার গ্রামে পরকীয়ার জেরে প্রেমিকার স্বামীর দেয়া আগুনে দগ্ধ ট্রাকচালক জহিরুল ইসলাম জহির (৩৬) ৪২ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে মারা গেছেন। বুধবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তিনি মারা যান। বৃহস্পতিবার বাদ আসর তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার কারণে ক্ষোভে গত সোমবার (১০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কৌশলে জহিরকে নিমসার এলাকার একটি হোটেলের ছাদে নিয়ে তার শরীরে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় অপর ট্রাকচালক মোসলেম উদ্দিন (৫৫)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দাউদকান্দি উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের রোশন আলীর ছেলে জহিরুল ইসলাম জহির ছোটবেলা থেকে বুড়িচং উপজেলার নিমসার গ্রামে তার মামা বাড়িতে বসবাস করে ট্রাক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বেশ কিছুদিন ধরে জহির জেলার আদর্শ সদর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের অপর ট্রাকচালক মোসলেম উদ্দিনের (৫৫) বাড়িতে যাওয়া-আসা শুরু করে। এরই মধ্যে মোসলেম উদ্দিনের স্ত্রীর (৩৩) সঙ্গে জহিরের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এতে জহির ও মোসলেমের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মোসলেম উদ্দিন কৌশলে জহিরকে ডেকে নিমসার এলাকার একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের পাশের একটি হোটেলের ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মোসলেম উদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে জহিরের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় জহির চিৎকার করে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসলে উপস্থিত লোকজন পানি দিয়ে আগুন নেভায়। ততক্ষণে জহিরের শরীরের বেশ কিছু অংশ দগ্ধ হয়ে যায়। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পুলিশ মোসলেম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে।
নিহত জহিরের ভাই মো. কালা জানান, পেট্রলের আগুনে দগ্ধ জহির ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে মারা গেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে নিমসার এলাকায় নামাজে জানাজা শেষে তাকে দাউদকান্দির গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বুড়িচং থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, এ ঘটনায় নিহতের ভাইয়ের করা মামলায় আসামি মোসলেম উদ্দিন কারাগারে রয়েছে। ঘটনার দায় স্বীকার করে সে জবানবন্দি দিয়েছে।